শা‘বান মাসের করণীয়
রামাযানের আগের মাস হিসাবে শা‘বান মাসের প্রধান করণীয় হ’ল, অধিকহারে ছিয়াম পালন করা। মা আয়েশা (রাঃ) বলেন,
عن عائشة قالت… وما رأيتُ رسولَ اللهَ صلى الله عليه وسلم استكملَ صيامَ شهرٍ قطُّ إلارمضانَ وما رأيتُه فى شهرٍ أكثرَ منه صيامًا فى شعبانَ، وفى رواية عنها: وكان يصومُ شعبانَ إلا قليلاً، متفق عليه-
অর্থঃ ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে রামাযান ব্যতীত অন্য কোন মাসে শা‘বানের ন্যায় এত অধিক ছিয়াম পালন করতে দেখিনি। শেষের দিকে তিনি মাত্র কয়েকটি দিন ছিয়াম ত্যাগ করতেন’।২৩ যারা শা‘বানের প্রথম থেকে নিয়মিত ছিয়াম পালন করেন, তাদের জন্য শেষের পনর দিন ছিয়াম পালন করা উচিত নয়।২৪ অবশ্য যদি কেউ অভ্যস্ত হন বা মানত করে থাকেন, তারা শেষের দিকেও ছিয়াম পালন করবেন।২৫
মোটকথা শা‘বান মাসে অধিক হারে নফল ছিয়াম পালন করা সুন্নাত। ছহীহ দলীল ব্যতীত কোন দিন বা রাতকে ছিয়াম ও ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করা সুন্নাতের বরখেলাফ। অবশ্য যারা ‘আইয়ামে বীয’-এর তিন দিন নফল ছিয়ামে অভ্যস্ত, তারা ১৩, ১৪ ও ১৫ই২৬ শা‘বানে উক্ত নিয়তেই ছিয়াম পালন করবেন, শবেবরাতের নিয়তে নয়। নিয়তের গোলমাল হ’লে কেবল কষ্ট করাই সার হবে। কেননা বিদ‘আতী কোন আমল আল্লাহ পাক কবুল করেন না এবং সকল প্রকার বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা ও প্রত্যাখ্যাত। আল্লাহ আমাদের সবাইকে পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে নিজ নিজ আমল সমূহ পরিশুদ্ধ করে নেওয়ার তাওফীক দান করুন! আমীন!!
২৩. বুখারী ও মুসলিম, মিশকাত হা/২০৩৬।
২৪. আবুদাঊদ, তিরমিযী প্রভৃতি, মিশকাত হা/১৯৭৪ (إذا انتصفَ شعبانُ فلاتصوموا) )
২৫. বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/১৯৭৩, ২০৩৮।
২৬. নাসাঈ, তিরমিযী, মিশকাত হা/২০৫৭।
রামাযানের ভূমিকা স্বরূপ শা‘বানের প্রথমার্ধে অধিকহারে নফল ছিয়াম পালন করুন। যারা অন্য মাসে আইয়ামে বীয-এর নফল ছিয়াম রাখেন, তারা শা‘বান মাসেও ১৩, ১৪ ও ১৫ তিনদিন উক্ত নিয়তে ছিয়াম রাখুন। ‘শবেবরাত’ কোন ইসলামী পর্ব নয়। ঐ নিয়তে ছালাত-ছিয়াম, দান-ছাদাক্বা কিছুই আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না। বরং রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর তরীকা বিরোধী হওয়ার কারণে এবং ঐ উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিদ‘আতী অনুষ্ঠানাদিতে অর্থ ও সময়ের অপচয়ের কারণে আখেরাতে গ্রেফতার হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। অতএব বিদ‘আত হ’তে বেঁচে থাকুন! আল্লাহ আমাদের সহায় হৌন!
كل أمتى يَدخلون الجنةَ إلامن أبى، قيل من أبى؟ قال: من أطاعنى دخل الجنةَ ومن عصانى فقد أبى رواه البخارى عن أبى هريرة- مشكوة للألبانى ح/১৪৩
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন, আমার সকল উম্মত জান্নাতে প্রবেশ করবে, কেবলমাত্র তারাই করবে না যারা ‘অসম্মত’। জিজ্ঞেস করা হ’ল ‘অসম্মত’ কারা? তিনি বললেন, যারা আমার আনুগত্য করল, তারাই জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং যারা আমার অবাধ্যতা করল, তারাই (জান্নাতে যেতে) অসম্মত’ (বুখারী, মিশকাত, আলবানী হা/১৪৩)।